প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নারী

একবিংশ শতাব্দীতে এসেও পরাধীনতার শেকলে বাধা নারীরা। হোক সে নিজের কথা বলার অধিকার কিংবা কাজ দিয়ে নিজেকে  প্রমাণ করার। খুব একটা ক্ষমতা হাতে নেই তাদের। আর এজন্য দায়ী আমাদের পুরুষ কিংবা পিতৃতান্ত্রিক সসমাজব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত একজন নারীকে প্রতিকূল পরিবেশের সংগে লড়াই করে বেচে থাকতে হয়। জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে গেলে তাদেরকে আমৃত্যু চেষ্টা করে যেতে হয়। পদে পদে কেবল বাধা আর থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টাকে নস্যাৎ করে সামনে এগিয়ে যেতে হয়।
 পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা আজও নারীদের কুক্ষিগত করে রেখেছে। একজন নারী গ্রামের হোক বা শহরের, শিক্ষিত বা অশিক্ষিত, নিজের পায়ে দাঁড়ানো বা পরনির্ভরশীল সে যাইহোক না কেন তাই আজকের দিনেও বাইরের দুনিয়ায় পা রাখতে গেলে তাকে হাজারো দফায় পরিবার থেকে অনুমতি নিতে হয়।
একজন নারীর চিরাচরিত প্রতিকৃতি হলো চার দেওয়ালের ভিতর বাস এবং রান্নাঘরের কাজ। এর বাইরে বেরুতে চাইলে তাকে মানুষিক এবং অনেকক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। কেউ কেউ সকল প্রতিকূলতা কাটাতে পারে। কেউবা জীবনযুদ্ধের হেরে গিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। নারীদের জন্মগতভাবেই দুর্বল মনে করা হয়। পুরুষের পাশাপাশি সকল কাজে, বিদ্যা ও বুদ্ধিতে সমানভাবে পারদর্শী নারীরা  সমাজ ও রাষ্ট্রের চোখে একরকম ‘অদৃশ্য’।
পিতৃতান্ত্রিক সমাজের সকল ক্ষমতার অধিকারী শুধুমাত্র পুরুষেরাই। নারীদের বন্দী করে রাখার কারনটা কখনো ধর্মের আড়ালে কখনোবা কেবলমাত্র নারী-নিগ্রহের এক বিকৃত চিন্তাধারা থেকে প্রসূত। ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রভাবে এই প্রথা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন না অনেক নারীই।
তবে ব্যতিক্রমঈ আছে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে থেমে না গিয়ে লড়াই করার মন্ত্রই হাতে তুলে নিয়েছেন অনেক নারীরাই। একজন নারী কার সঙ্গে থাকতে চায়, কার সঙ্গে বাঁচতে চায়, সেটা ঠিক করার স্বাধীনতাটুকু অবশ্যই তার প্রাপ্য। ধর্মের নামে নারীদের দমিয়ে রাখা একদিন অবশ্যই আর ধোপে টিকবে না। সেই দিনের আশাতেই লড়াই চলুক।
নারীর বৈচিত্রময় পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, বিশেষ করে যারা অসহায় তাদের কথা ভেবে ব্য‌বস্থা ও কার্যক্রম নেওয়া উচিৎ যাতে তারা যথার্থ সহযোগিতা পান। এ ধরনের নারীরা হলেন দারিদ্রসীমার নীচে থাকা নারী, নিরাশ্রয় মহিলা, অসুবিধায় পড়া মহিলা, প্রাকৃতিক কারণে বিপাকে পড়া মহিলা, কম উন্নত এলাকার মহিলা, অসহায় বিধবা, বয়স্ক মহিলা, দুর্ভোগে পড়া একক মহিলা, পরিবারের শীর্ষে থাকা মহিলা, কর্মচ্যুত মহিলা, উদ্বাস্তু, বিবাহজনিত হিংসার শিকার, পরিত্য‌ক্তা, দেহপোজীবী মহিলা প্রমুখ।
Share the Post:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *