“বিয়ের যখন হয়ে ওঠে আতংক”

বেশ কয়েক বছর আগের কথা। আমি আমার এক বান্ধবীর বাড়িতে সুন্দর কিছু সময় কাটানোর জন্য বেড়াতে গেছিলাম। আমরা আমাদের মত করেই খোশগল্প করছিলাম। এবং বেশ কিছুক্ষণ পড়েই আমার সে বান্ধবীর একজন ভাড়াটিয়া পাশের ঘর থেকে বের হয়ে এলো এবং সাথে ছিল উনার স্ত্রী। মেয়েটি খুবই অল্প বয়সী, বড়জোর ২০-২১ বছর হবে তার বয়স। আমিতো এতো অল্পবয়সী একটা মেয়ে বিয়ে করে ফেলেছে, এটা দেখেই অবাক। আবার সে মেয়েটি অঝোরে কান্না করছিল, তা দেখে তো আমি আরও অবাক, কি হলো তাঁর? এমন করে কাঁদছে কেন?  কিছুক্ষণ কথা বলে বুঝতে পারলাম মেয়েটা নাকি সুইসাইড করতে গেছিল। অনেক জিজ্ঞাসা করার পর মেয়েটি তাঁর কারন গুলো বলল, যা সত্যি এ যুগে দাঁড়িয়ে বিশ্বাস করতে কষ্টই হয়।

সে বলল তার হাজবেন্ড-এর নাকি খুব সন্দেহ বাতিক। এবং তাঁর স্বামীর সন্দেহের মাত্রা এতোই বেশি যে সে তাঁর বউকে কোন মোবাইল ফোন দেয়নি, তাঁর বাড়িতে কারো সাথে সে যোগাযোগ করতে পারেনা এমনকি বাসা থেকে বের হওয়াও তাঁর জন্য বারণ। কি অদ্ভুত ব্যাপার? এই ভদ্রলোক নাকি আবার নামকরা এক স্কুলের শিক্ষক! এধরনের মানুষ যে কি শিক্ষা দিবে তা বুঝতে বাকি রইলো না। মেয়েটা যথেষ্ট শিক্ষিত একটা মেয়ে, তবে তাঁর সকল পরীক্ষার সনদ তাঁর হাজবেন্ড-এর জিম্মায় রাখতে হয়েছে যাতে সে কোন চাকরির আবেদন করতে না পারে!

শুনলাম, মেয়েটি একবার তার ভাইয়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে বাপের বাড়ি যাবে,যাওয়ার আগে তার স্বামী ভদ্রলোক তাকে নগ্ন করে সার্চ করেছে কোন টাকা পয়সা আছে কিনা! তাদের তিন বছরের সংসার! মেয়েটি এর আগে আরও কয়েক সুইসাইড করতে গিয়েছিল।

সত্যিই এমন একটা  অমানুষের সাথে তিন বছর তো দূরের কথা, তিন দিনও থাকা সম্ভব না। কিন্তু নিজের জীবনকে শেষ করে দেয়া কোন সমাধান হতে পারে না।

 আমি তো ভেবেই পাইনা কিভাবে এ যুগের স্বামীরা এধরনের আচরণ করে বিয়েটাকে একটা আতঙ্কে পরিণত করে! আরও অবাক হই যখন দেখি যে এখনকার মেয়েরাও এসব বিষয় চোখ বুজে সহ্য করে যায়। তাহলে এতো শিক্ষা-দীক্ষা করে কি লাভ বলেন তো?

মেয়েরা আর কবে বুঝতে পারবে? কবে এধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে? নিজেকে একজন নারী হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবে ভাবতে শিখো। সকল লাঞ্ছনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শিখো!

Share the Post:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *